Monday, 27 April 2015

প্রিয়নবীর প্রিয় খাবার এবং বর্তমান বিজ্ঞানের স্বীকৃতি

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ
জীবনব্যবস্থা। মানবজাতির সব
ধরনের জীবন প্রণালীর সবকিছুই
ইসলামে বলা আছে। শিক্ষা,
স্বাস্থ্য, চলাফেরা, পোশাক-
আশাক, আহার, ঘুম, নিরাপত্তার
উপায়, ব্যবসা-বাণিজ্য,
রাজনীতি, অর্থনীতি সহ সব; সবই
দ্বীন ইসলামে মানুষের কল্যাণে
বর্ণিত আছে। সবাই তা বুঝতে না
পারলেও জ্ঞানীরা ঠিকই বুঝতে
পারেন। পৃথিবীর জগদ্বিখ্যাত সব
বিজ্ঞানীই ইসলামের মহাগ্রন্থ
আল কুরআন থেকে গবেষণা করে
নতুন নতুন জ্ঞান-বিজ্ঞানের
উপকরণ আবিষ্কার করেছেন। আজ
অবধি ইহুদী-খ্রিস্টানরা পবিত্র
কুরআন গবেষণা করেই চিকিৎসা,
স্বাস্থ্য, গ্রহ-নক্ষত্ররাজীর
দিকনির্দেশনা, চিকিৎসা;
ইত্যাদি নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক
আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীকে
প্রদান করছেন। কিন্তু মুসলমানরা
তা বুঝে না। তারা মনে করেন,
জ্ঞান-বিজ্ঞান ইহুদী-
খ্রিস্টানদের হাত ধরেই সৃষ্টি।
যাই হোক, আজ এখানে এমন কিছু
দৈনন্দিন খাবার ও তার
গুণাবলীর কথা বলছি, যা
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ
(সা.) এর কাছে অতিব প্রিয় ছিল।
দেড় হাজার বছর পর আজকের
বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীরা
রিসার্চ করে দেখেছেন,
আমাদের নবীজির প্রিয়
খাবারগুলোর গুণাগুণ ও উপাদান
মানবজাতির জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর
এবং উপযুক্ত। সেইসব
খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে
বার্লি, খেজুর, ডুমুর, আঙ্গুর, মধু,
তরমুজ, দুধ, মাশরুম, অলিভ অয়েল,
ডালিম-বেদনা, ভিনেগার ও
পানি।
বার্লি (জাউ): জ্বর এবং পেটের
পীড়ায় অত্যন্ত উপকারী এটি।
প্রিয়নবী (সা.) নিয়মতিই বার্লি
ভক্ষন করতেন।
খেজুর: খেজুরের গুণাগুণ ও পুষ্টিগুণ
অবর্ণনীয়, অপরিসীম। এর
খাদ্যশক্তি ও খনিজ লবণের
উপাদান শরীরকে সতেজ-সজীব
রাখে। হযরত মুহম্মদ (সা.) বলতেন
‘যে বাড়িতে খেজুর নেই সে
বাড়িতে কোনো খাবার নেই’।
এমনকি তিনি সন্তান প্রসবের পর
প্রসূতি মাকে খেজুর খাওয়ার
পরামর্শ দিয়েছেন।
ডুমুর: এটি খুবই পুষ্টিকর এবং
ভেষজগুণসম্পন্ন খাবার। যাদের
পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য আছে
তাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী
খাবার ডুমুর।
আঙ্গুর: আঙ্গুরের পুষ্টিগুণ ও স্বাদ
অপরিসীম। এই ফলটির উচ্চ খাদ্য
শক্তির কারণে এটা থেকে
আমরা তাৎক্ষণিক এনার্জি পাই
এবং তা স্বাস্থ্যের জন্য
উপকারী। আঙ্গুর কিডনির জন্য
উপকারী এবং বাওয়েল
মুভমেন্টে সহায়ক। যাদের
আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল
সিনড্রোম আছে তারা নিয়মিত
আঙ্গুর খেতে পারেন। আমাদের
প্রিয় নবী আঙ্গুর খেতে খুবই
ভালো বাসতেন।
মুধ: মধু আমাদের প্রিয়নবীর অত্যন্ত
প্রিয় খাবার ছিলো। এর নানা
পুষ্টিগুণ ও ভেষজগুণ রয়েছে। মধুকে
বলা হয় খাবার, পানীয় এবং
ওষুধের সেরা। হালকা গরম
পানির সঙ্গে মিশিয়ে মধু পান
করা ডায়রিয়ার জন্য উপকারী।
খাবারে অরুচি, পাকস্থলীর
সমস্যা, হেয়ার কন্ডিশনার ও
মাউথ ওয়াশ হিসেবেও মধু বেশ
ভালো।
তরমুজ: প্রিয়নবী তরমুজ আহারকে
অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। সব ধরনের
তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
যেসব গর্ভবর্তী মায়েরা তরমুজ
আহার করেন তাদের সন্তান প্রসব
সহজ হয়। তরমুজের পুষ্টি, খাদ্য ও
ভেষজগুণ এখন সর্বজনবিদিত ও
বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য।
দুধ: দুধের খাদ্যগুণ, পুষ্টিগুণ ও
ভেষজগুণ বর্ণনাতীত। আজ থেকে
দেড় হাজার বছর আগে বিজ্ঞান
যখন অন্ধকারে তখন প্রিয়নবী (সা:)
দুধ সম্পর্কে বলেন, দুধ হার্টের জন্য
ভালো। দুধ পানে মেরুদণ্ড সবল হয়,
মস্তিষ্ক সুগঠিত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি
ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়। আজকের
বিজ্ঞানিরাও দুধকে আদর্শ
খাবার হিসেবে ঘোষণা
করেছেন এবং এর ক্যালসিয়াম ও
ভিটামিন ডি অস্থিগঠনে
সহায়ক।
মাশরুম : আজ বিশ্ব জুড়ে মাশরুম
একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং
মাশরুম নিয়ে চলছে নানা
গবেষণা। অথচ দেড় হাজার বছর
আগে প্রিয়নবী (সা:) জানতেন
মাশরুম চোখের জন্য ভালো। এটা
বার্থ কন্ট্রোলে সহায়ক ও
মাশরুমের ভেষজগুণের কারণে
এটা নার্ভ শক্ত করে এবং শরীরের
প্যারালাইসিস বা অকেজো
হওয়ার প্রক্রিয়া রোধ করে।
জলপাই তেল : অলিভ অয়েলের
খাদ্য ও পুষ্টিগুণ অনেক। গবেষণায়
দেখা গেছে অলিভ অয়েল ত্বক ও
চুলের জন্য উপকারী এবং বয়স ধরে
রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক বা
বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া
বিলম্বিত করে। এছাড়া অলিভ
অয়েল পাকস্থলীর প্রদাহ
নিরাময়ে সহায়ক।
ডালিম-বেদানা : বেদানার
পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণের
পাশাপাশি এটার ধর্মীয় একটি
দিক আছে। প্রিয়নবী (সা:)
বলেছেন, এটা আহারকারীদের
শয়তান ও মন্দ চিন্তা থেকে বিরত
রাখে।
ভিনেগার : ভিনেগারের ভেষজ
গুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। প্রিয়নবী
(সা:) অলিভ অয়েলের সঙ্গে
মিশিয়ে ভিনেগার খাওয়ার
পরামর্শ দিয়েছেন। আজকের এই
মর্ডান ও বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব
সাফল্যের যুগে বিশ্বের বড় বড়
নামি-দামি রেস্টুরেন্টে
বিশেষ করে এলিট ইটালিয়ান
রেস্টুরেন্টে অভিল অয়েল ও
ভিনেগার এক সঙ্গে মিশিয়ে
পরিবেশন করা হয়।
খাবার পানি : পানির অপর নাম
জীবন। পানির ভেষজগুণ
অপরিসীম। প্রিয়নবী (সা:)
পানিকে পৃথিবীর সেরা
ড্রিংক বা পানীয় হিসাবে
উল্লেখ করেছেন। সৌন্দর্য চর্চা
থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য রক্ষায়
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আজ
প্রচুর পানি পান করতে বলেন।
জীবনের সর্বক্ষেত্রে
পরিমিতবোধ চর্চা করুন এবং
স্বাস্থ্যসম্মত, পুষ্টিকর খাবার
খান। এর ফলে যেমন ইসলামের
বিধিবিধান পালন করা হবে,
তেমনি নিজের কল্যাণও হবে।
আর ইসলামেই তো মানবজাতির
কল্যাণ নিহিত আছে।  PUBLISHED BY OVI♣

No comments:

Post a Comment